বশির আল-মামুন ,চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহর পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শেষে বিপুলসংখ্যক স্থানীয় জনতা এ আলটিমেটাম দেয়।
এর আগে, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহর পদত্যাগসহ ১৭ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী এমডির কক্ষে বিক্ষোভ করে পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। দীর্ঘ এক ঘণ্টা ধরে পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বারবার এমডিকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তবে এমডি পদত্যাগে রাজি হননি। পরে আন্দোলনকারীরা তাকে চব্বিশ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ওয়াসা ভবন ত্যাগ করেন।
আন্দোলনকারীদের ১৭ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এমডি ফজলুল্লাহর আয়কর বিবরণী ২০০৯ থেকে ২০২৪ এবং সম্পদ বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ করা, স্বৈরাচারী সরকারের পোষ্যদের নিয়ে গঠিত বোর্ড বাতিল করা, ৪ আগস্ট হাসিনার পক্ষ নিয়ে তাণ্ডবে অংশ নেওয়া ওয়াসার কর্মচারীদের চিহ্নিত করে স্থায়ী বহিষ্কার করা, ফজলুল্লাহর সময়ে বহিষ্কৃত সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীতে পুনর্বহাল করা অন্যতম।
এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা যে ১৭টি দাবি দিয়েছেন সবগুলো দাবি যৌক্তিক। দাবিগুলোর প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা দুর্নীতিগ্রস্ত। আশা করি, তিনি (এ কে এম ফজলুল্লাহ) ওয়াসার এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করে ওয়াসাকে গঠনমূলক সংস্কারে সহযোগিতা করবেন।’
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কারও চাপে পদত্যাগ করবো না। সরকার চাইলে আমি পদত্যাগ করবো। ওয়াসায় ১৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালনকালে আমি কোনও অনিয়ম-দুর্নীতি করিনি। একটি প্রকল্পেও অর্থ আত্মসাৎ করেছি এ ধরনের প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াসায় আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ১২ কোটি লিটার পানি। বর্তমানে ৫৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদনে সক্ষম করেছি। চট্টগ্রাম শহরের ৯৫ শতাংশ মানুষ ওয়াসার পানি পাচ্ছে। মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ পানি পাচ্ছেন না। বঞ্চিতদের জন্যও প্রকল্প নেওয়ার উদ্যোগ আছে।’
১৯৪২ সালে জন্ম নেওয়া এ কে এম ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন ২০০০ সালে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান। এরপর আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসাতেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হয়। ওয়াসা বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়। তখন এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে ১৫ বছর ধরে এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
Leave a Reply